শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:২১ অপরাহ্ন

সালমান শাহ’র মৃত্যুর ২৭ বছরেও ভাটা পড়েনি জনপ্রিয়তায়

বিনোদন প্রতিবেদক ,আজ (৬ সেপ্টেম্বর) অমর নায়ক সালমান শাহর চলে যাওয়ার দিন। ১৯৯৬ সালের এ দিনে রহস্যমৃত্যুকে আলিঙ্গন করে পরপারে পাড়ি জমান তিনি। মৃত্যুর ২৭ বছর পরও দর্শকের আলোচনা-আগ্রহের জায়গাজুড়ে রয়েছেন এই ‘স্বপ্নের নায়ক’। ভক্তরা তাকে অকালে হারিয়ে ফেলার আক্ষেপে পোড়েন আজও। মেতে উঠেন তার সিনেমা-নাটকের খোশগল্পে। ১৯৯৬ সালের আজকের এই দিনে প্রয়াত হন এই ক্ষণজন্মা অভিনেতা। দেখতে দেখতে তার মৃত্যুর ২৭ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা এখনও কমেনি।

ঢাকাই সিনেমার নায়ক হওয়ার আগে সালমান শাহর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল টেলিভিশন নাটক দিয়ে। চার বছরের ক্যারিয়ারে মাত্র ২৭ সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছেন আকাশসমান জনপ্রিয়তা। এক শাবনূরের সঙ্গেই জুটি বেঁধে কাজ করেছেন ১৪টি সিনেমায়। উপহার দিয়ে গেছেন বাংলা সিনেমার এক সোনালি অধ্যায়।

এই প্রজন্মের অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের কাছে প্রিয় অভিনেতা হয়ে আছেন এই অমর নায়ক। এখনও টিভি পর্দায় তার সিনেমা দর্শক আগ্রহ নিয়ে দেখেন। শুধু অভিনয় নয়, তিনি ফ্যাশনেও নতুন মাত্রা যোগ করেছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছিল। মঈনুল আহসান সাবেরের লেখা ‘পাথর সময়’ নাটকে একটি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে সালমান শাহ অভিনয়জীবন শুরু করেন। পরে আরও কিছু নাটকে অভিনয় করেও দারুণ প্রশংসিত হয়েছিলেন সালমান।

‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমা দিয়ে মৌসুমীর সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন সালমান। পরে মৌসুমীর সঙ্গে ‘স্নেহ’, ‘অন্তরে অন্তরে’ সিনেমায় তাকে দেখা গিয়েছিল। তবে শাবনূরের সঙ্গেই বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সালমান শাহ। এখনও তাদের সিনেমার সেরা জুটি বলা হয়। মৌসুমী বলেন, ‘আজ ৬ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রের জন্য একটি কালো অধ্যায়। আমার জীবনেরও একটি খুব কষ্টের দিন। কেননা এই দিনে আমার বন্ধু,পথচলার প্রথম সহযাত্রী সালমান শাহকে হারিয়েছি। আমরা ওকে ইমন বলে ডাকতাম। তার চলে যাওয়াটা চিন্তার বাইরে ছিল। আমরা কখনও ভাবিনি। ওর ছেলে মানুষি, রাগ, অভিমান ছিল। সবমিলিয়ে অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা ছিল। এত বছরে একটা দিনের জন্যও আমি ওকে ভুলতে পারিনি।’

সালমান শাহর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করে কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা বলেন, ‘কক্সবাজারে ‘মহামিলন’ সিনেমার শুটিং হয়েছিল। একটি দৃশ্য ধারণ করা হচ্ছিল পাহাড়ের ওপর। আমার হাতে পিস্তল ছিল। দৃশ্যটিতে অংশ নিয়েছিলাম আমি, রাজীব ভাই, শারমিন, সালমান শাহ ও শাবনূর। সেই দৃশ্যটি ধারণের নানা সময়ে আমি শুটিংয়ে আনা অন্য একটি চেয়ারে বসি। কারণ হোটেল থেকে আমার চেয়ারটি নিতে মনে ছিল না। সালমান বিষয়টি খেয়াল করে এবং শুটিংয়ে তার নেওয়া চেয়ারটি আমাকে গিফট করে। আমি ‘না’ করার পরও সালমান তার নিজের ব্যবহৃত চেয়ারটি তখনই আমাকে গিফট করে। সেই চেয়ারটি দীর্ঘদিন আমার কাছে সংরক্ষিত ছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘যখন মোবাইল ফোন প্রথম বাজারে এলো, সে সময় সাইজে মোবাইল অনেক বড় ছিল। তো আমি সেই মোবাইল ব্যবহার করতে পারতাম না। সালমানই আমাকে একটি চিরকুটে মোবাইল ব্যবহার করার পদ্ধতি প্রথম শিখিয়ে দিয়েছিল। যে কারণে পরে মোবাইল ব্যবহার করা আমার কাছে বেশ সহজ হয়ে গিয়েছিল। সালমানের নিজের লেখা সেই ‘চিরকুট’ টি এখনও আমার কাছে বেশ যত্নে রাখা আছে। সেই চিরকুটেই মাঝেমধ্যে আমাদের হারিয়ে যাওয়া সালমানকে খুঁজে বেড়াই। সালমান একটি কথা আমাকে প্রায়ই বলত, আপনি আমার আপন মা না হলেও আপনি আমার সুইট মা। মা ছাড়া সে আমাকে অন্য কিছুই ডাকত না। সত্যিই, এতটা বছর পরও তাকে নিয়ে কথা বলতে গেলে আমি ভীষণ আবেগাপ্লুত হয়ে যাই।’

এই নিউজটি আপনার ফেসবুকে শেয়ার করুন

© shaistaganjerbani.com | All rights reserved.